‘রহস্যজনক কারণে’ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বেসরকারি নার্সিং কলেজের বিএসসি কোর্সের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস ও ইন্টার্নশিপ বন্ধ রয়েছে। তবে জনস্বার্থে ও রোগীদের সেবা নিশ্চিতে বেসরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী ও গ্র্যাজুয়েট নার্সদের ইন্টার্নশিপ চালুর দাবি জানিয়েছে অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘ব্রাইট লাইফ ভলান্টিয়ার্স’।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের (বিএনএমসি) কাছে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
এদিন বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে বিএনএমসির প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার নিলুফার ইয়াসমিনের সাথে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সৌজন্য সাক্ষাত করা হয়।
এ সময় ব্রাইট লাইফ ভলান্টিয়ার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের হাজার হাজার মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল রামেক হাসপাতাল। কিন্তু সেই হাসপাতালে বেসরকারি নার্সিংয়ের বিএসসি কোর্সের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস ও ইন্টার্নশিপের অনুমতি নেই। রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন জানানো হলেও তারা সাড়া দেয়নি। অথচ দেশের সব সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ করছেন। শুধুমাত্র রামেক হাসপাতালেই ব্যতিক্রম। আমাদের বিভাগীয় শহরের সরকারি হাসপাতালে নার্সিং শিক্ষার্থী ও গ্র্যাজুয়েট নার্সরা ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না, এটা মেনে নেয়ার নয়।’
আমানুল্লাহ আমান আরও বলেন, ‘ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু হাসপাতালে ডিউটিতে গিয়ে তাদের নানা ধরণের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। যা মোটেও কাম্য নয়। ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদেরও ডিউটি ও ইন্টার্নশিপ বন্ধ করা হবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। জরুরি বিভাগে গুরুতর রোগী ভর্তির পর নার্স সংকেটের কারণে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়, অনেক সময় রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। হিমশিম খান সিনিয়র নার্সরা। অথচ বেসরকারির নার্সিং শিক্ষার্থীদের ডিউটি ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিলে রোগীরা দ্রুত সময়ে পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাবেন ও সেবার পরিধি আরও বাড়বে। রামেক হাসপাতালে অবশ্যই নার্সিংয়ের সব কোর্সের শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিতে হবে।’
এ সময় বিএনএমসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ‘শুধু রাজশাহীতেই এ সমস্যাটা আছে। বিষয়টি রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। সামনে স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব স্যারদের মিটিং আছে। উনারা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেবেন। আমরাও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আমরাও অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করব।’
বেসরকারি নার্সিং কলেজের মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব হাসপাতাল না থাকলে ভর্তির কোনো আসন আর বৃদ্ধি করা হবে না। প্রয়োজনে কয়েকটি কলেজ মিলে একটি হাসপাতাল করতে হবে, তবু হাসপাতাল থাকা লাগবে এবং শিক্ষার্থীদের ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাছাড়া আমরা কলেজ অনুমোদন দেব না।’
এ সময় সংগঠনটির কার্যক্রম সম্বন্ধে ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন বলে জানান বিএনএমসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার। তিনি বলেন, ‘কার্যক্রম দেখেছি। আপনারা এসব ভাল কাজ চালিয়ে যান।’