শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য ও নির্যাতনের অবসান ঘটানোর প্রত্যয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) রাজশাহী মহানগর কমিটির সম্মেলনে আইউব হোসেন খানকে সভাপতি এবং অসীম সরকার লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্যের একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজশাহী নগরীর আলুপট্টি মোড়ে ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জির উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে এ সম্মেলনের সূচনা হয়।
সিপিবি রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি হুমায়ুন রেজা জেনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও রাকসুর সাবেক ভিপি রাগীব আহসান মুন্না, রাজশাহী জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আফতাব হোসেন কাজল, সিপিবি নেতা অধ্যক্ষ জুলফিকার আহমেদ গেলাপ, মহানগর সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার মণ্ডল, রাজশাহীর প্রবীণ সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, মহিলা পরিষদ রাজশাহী শাখার সভাপতি কল্পনা রায়, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী রাজশাহী জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান সোনা, কৃষক সমিতির নেতা রাজিব আহসান জিমি, ট্রেড ইউনিয়ন সভাপতি আইউব হোসেন, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ফিরোজ হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পরমা মোস্তফা।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপিবি রাজশাহী মহানগর কমিটির সদস্য সেলিনা বানু।
বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক এই দিনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টি নতুন করে শপথ নিচ্ছে, শহীদদের আত্মদানে গঠিত বৈষম্যহীন সমাজের লক্ষ্যে সংগ্রাম আরও বেগবান করা হবে।
তারা বলেন, দেশের অভ্যন্তরে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যেমন লড়াই হয়েছে, তেমনি বৈদেশিক আধিপত্য—বিশেষত ভারত ও আমেরিকার আধিপত্যবাদী হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি শোষণমুক্ত, শ্রেণীবৈষম্যহীন সমাজ গঠনে পার্টি কাজ করে যাবে।
এর আগে সকাল ১০টায় “জুলাই গণঅভ্যুত্থান” স্মরণে “জুলাই ২৪-এর অগ্নিমশাল অতিক্রম করবে ক্রান্তিকাল” এই স্লোগানে একটি সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।মিছিলটি নগরীর আলুপট্টি মোড় থেকে শুরু হয়ে সাহেববাজার মনিচত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় আলুপট্টিতে এসে শেষ হয়।
মিছিল শেষে উদীচীর শিল্পীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত ও ইন্টারন্যাশনাল সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধনী ব্যানারে বিভিন্ন প্রতিবাদী ও দাবি-সংবলিত স্লোগান উপস্থিতদের উদ্দীপ্ত করে তোলে।স্লোগানগুলো ছিল: “শোষণ মুক্তি ও সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে চলবে”।”শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য ও নির্যাতনের অবসান করতে সমাজতন্ত্রের সংগ্রাম জোরদার করুন”।”ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ ও নব্য ফ্যাসিবাদী প্রবণতা প্রতিহত করুন”।”মব, সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ রুখে দাঁড়ান”।”চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা, রাখাইনে করিডোরের নামে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন রুখে দাঁড়ান”।”নির্বাচন সংস্কার ও বিচার নিয়ে দ্বন্দ্বমুখর রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে”। “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সকল অপতৎপরতা রুখে দিন”।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ রাজশাহীর জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের লড়াইয়ে কমিউনিস্ট পার্টির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হন।