রাজশাহীর পবা উপজেলার ৫নং হড়গ্রাম ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে একটি প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা। এতে স্থানীয় কয়েক হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভুগলেও দেখার যেনো কেউ নেই।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ডবিহীন মেসার্স ইমন প্লাস্টিক নামে ওই কারখানায় পলিথিন ও বিভিন্ন প্লাস্টিক রিসাইক্লিং করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। রোদে শুকাতে রাখা হচ্ছে নোংরা প্লাস্টিক। শ্রমিকরা মুখে কোনো মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই ময়লা-আবর্জনা থেকে এসব প্লাস্টিক বাছাই করছেন। এতে তারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। এছাড়াও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই হাইড্রোলিক মেশিনে প্লাস্টিক সামগ্রী উৎপাদন করা হচ্ছে। এমনকি কারখানায় অগ্নিনির্বাপণেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয়রা জানান, সামান্য বাতাসেই এসব পলিথিন ও প্লাস্টিকের টুকরো তাদের বাড়িঘরে উড়ে আসে। বিষাক্ত ধোঁয়া ও বায়ুদূষণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি প্লাস্টিকের বিষাক্ত বর্জ্য রাস্তার উপর ফেলায় যাতায়াতকারী হাজারো মানুষও রোগ-জীবাণুর ঝুঁকিতে পড়ছেন। তারা দ্রুত দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত বর্জ্যের অভিশাপ থেকে মুক্তির দাবি জানান।
জানা যায়, পবা উপজেলার হড়গ্রাম ইউনিয়নের ব্যবসায়ী মো. শরিফ আলী মেসার্স ইমন প্লাস্টিক নামে এই কারখানাটি স্থাপন করেছেন।
এ বিষয়ে কারখানার মালিক শরিফ আলী জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং ফ্যাক্টরি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট রয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা উৎপাদন-বিপণনের সনদ নেই। শুধু ফায়ার সার্ভিসের একটি পুরনো সার্টিফিকেট আছে, যা হালনাগাদ করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, “পরিবেশ অফিস আমাদের ম্যানেজ করা আছে, তাই কোনো সমস্যা হয় না।”
সরেজমিনে গেলে নামধারী এক ব্যক্তি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতিবেদককে ফোন করে জানান, “ওই কারখানা আমার ভাইয়ের, দয়া করে এমন কিছু করবেন না যেন মান-সম্মান নষ্ট হয়।”
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছাঃ তাছমিনা খাতুন বলেন, “পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া প্লাস্টিক ও পলিথিন রিসাইক্লিং কারখানা পরিচালনা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা সরেজমিনে গিয়ে এ ফ্যাক্টরির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।”