রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী এলাকার জোতকার্তিক বি. এন. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ বোর্ড না করেই টাকার বিনিময়ে চারটি পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়ে এমপিওর জন্য আবেদন করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সীমাহীন দুর্নীতির বিচার ও এমপিও আবেদন বাতিলের দাবি জানিয়ে রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন নন্দনগাছীর সাবেক ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন। তিনি কালাবীপাড়া এলাকার মৃত ছবির উদ্দিনের ছেলে।
মকবুল হোসেন আবেদনে উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষক তাকে জানান যে, আইসিটি ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। তার ছেলের বৌকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে বিভিন্ন সময়ে মোট ৯ লাখ টাকা তিনি প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে নিজ হাতে পরিশোধ করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তার ছেলের বৌকে নিয়োগ না দিয়ে প্রধান শিক্ষক তালবাহানা শুরু করেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারেন যে, আইসিটি পদসহ মোট চারটি পদে প্রায় অর্ধকোটি টাকার বিনিময়ে বাস্তবে কোনো নিয়োগ বোর্ড ছাড়াই ব্যাকডেটে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এর পরই তিনি এমপিও আবেদন বাতিলের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগকারী মকবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমার ছেলের বৌকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৯ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু বেশি টাকার বিনিময়ে অন্যজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি এর বিচার চাই এবং এমপিও আবেদন বাতিলের দাবি জানাই।”
স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোহা. আবদুর রশিদ বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। একজন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করানো হবে। টাকা লেনদেনের অভিযোগকেও গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”